পরিবার নিয়ে বাজে কথা বললে আইনের আশ্রয় নিবঃ তাজিন

অভিনেত্রী তাজিন আহমেদের মৃত্যুর পর তার ফুপু জনপ্রিয় অভিনেত্রী দিলারা জামানের ভূমিকা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। যখন তাজিন অর্থকষ্টে দিনযাপন করছিলেন, সে সময় নিকটাত্মীয়দের কেউই কোনো খবর নেননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে গত প্রায় এক সপ্তাহে কোনো ধরনের বক্তব্য দেননি দিলারা। ২৭ মে, রবিবার বিকেলে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন বর্ষীয়সী এ অভিনেত্রী।

দিলারা জামান বলেন, ‘অনেকেই উল্টাপাল্টা কথা বলছে, আমাদেরকে দোষারোপ করছে। গতকাল তাজিনের কুলখানিতে আমি অভিনয়শিল্পী সংঘের অনেকের সামনেই বলেছি, এখন অনেকেই সহানুভূতি দেখাচ্ছে।

কিন্তু অতীতে তো পরিস্থিতি এ রকম ছিল না।…না জেনে আমাদের পরিবার নিয়ে কেউ আরেকটা বাজে কথা বললে আইনের আশ্রয় নিব। কারণ এতে করে সাধারণ মানুষ আমাদেরকে ভুল বুঝছে। এখন অনেকেই বলছে, আমি তাজিনের বিপদের সময় ওর পাশে দাঁড়াইনি। সেটা কী ঠিক? আমি তো আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে ওদের জন্য সব করেছি।’

দিলারা দাবি করে বলেন, ‘সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে একটা সময় গিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তাজিনের পরিবার। আমার আপন ছোট ভাইয়ের মেয়ে যদি খারাপ অবস্থায় থাকে, তার জন্য কি আমাদের মন কাঁদবে না? এরপর আমার এক আত্মীয় বলল, ‘‘ফুপি তুমি কি তাজিনকে টাকা দাও?’’ আমি বললাম, ‘‘হ্যাঁ’’।

তারপর সে আমাকে বলল, তাজিন অযথা টাকা নষ্ট করে। এরপর থেকে আমি গত প্রায় চার-পাঁচ বছর তাকে আর কোনো টাকা দিইনি।’ দিলারার ভাষ্য, পরিবারের সম্পত্তি থেকে তাজিন আহমেদের মা দুটি ফ্ল্যাটের টাকা পেয়েছিলেন।

কথায় প্রসঙ্গ হিসেবে আসে তাজিনের সঙ্গে অভিনেতা এজাজ মুন্নার বিয়ের প্রসঙ্গ। দিলারা বলেন, ‘ওর বিয়ের সময় আমাদের পরিবারের কেউ যাইনি। কিন্তু আমি গিয়েছি, যার কারণে আমার ভাই, আমার সঙ্গে চার বছর কোনো কথা বলে নাই। সে বলেছে, তুমি কেনো গেলা? আমি বলেছি ওর বাবা নেই, তাই আমি গিয়েছি।’

অভিনয় সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, তাজিন অসুস্থ হয়ে মেডিকেলে ভর্তি হন। তা জেনেও দিলারা তাকে দেখতে যাননি। এ ছাড়া যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এ বিষয়ে দিলারা বলেন, ‘আমাকে যখন ফোন দেওয়া হয়েছিল, তখন আমি শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলাম। আমার ব্যাগ ছিল মেকআপ রুমে, আমি ছিলাম দূরে। শুটিং হচ্ছিল মধুমতি মডেল টাউনে।

আমি দেখলাম অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন। আমি আর ব্যাক করিনি। তারপর দুপুরের দিকে শুটিংয়ে ইউনিটের লোকজন দেখি আমার দিকে তাকিয়ে কী কথা যেন বলছে। আমি বললাম, কিরে কী হয়েছে? ওরা বলল, তাজিন আপা অসুস্থ।

আমি ভেবেছি, ওর শ্বাস কষ্ট হয়েছে। তারপর থেকে আমি অস্থির হয়ে গিয়েছিলাম। কোনোভাবেই কাজ করতে পারছিলাম না। এরপর শুনলাম, ও লাইফ সাপোর্টে আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘‘কেন?’’ বলল, ‘‘শরীর খুব খারাপ’’। তারপর শুনলাম, ওর অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। তখনই আমি শুটিং বাদ দিয়েই হাসপাতালের দিকে রওনা দিয়েছি।’

গত মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাজিন আহমেদের। সেদিন সকাল ১০টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে লাইফ সাপোর্ট রাখা হয়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এই অভিনেত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। ১৯৭৫ সালে নোয়াখালী জেলায় জন্ম হয় তাজিনের। তিনি ঢাকার ইডেন কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।

শেয়ার করুন: