চোখে চশমা, শার্ট, টাই পরা ঝাল মুড়ি বিক্রেতা ইনি কে?

চোখে চশমা, শার্ট, টাই- কালো প্যান্ট, কালো জুতা, গোলাপি শার্ট, গলায় কফিরঙা টাই, ‍হাতে ঘড়ি, পকেটে কলম, চোখে হালকা ফ্রেমের চশমা। মাঝারি গড়নের স্বাস্থ্যের এ লোকটিকে ঘিরেই ফুটপাতে জমে আছে জটলা। পথচারীদের চোখেও উৎসুক দৃষ্টি!

এটুকু শুনে মনে হতে পারে, এ নিয়ে ভাবার কি আছে! কোনো করপোরেট কর্মজীবী হবেন। করপোরেট, কিন্তু জুলহাস হওলাদার বেছে নিয়েছেন তার নিজের প্রতিষ্ঠান। সেখানে তিনিই প্রধান নির্বাহী।

গত তিন বছর যাবৎ রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সামনে যাত্রী ছাউনির পাশে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।আর ভোজন রসিকদের মুখে তুলে দেন সুস্বাদু ঝাল মুড়ি। তবে জুলহাস মোটেও বিব্রত নন।

তার বক্তব্য, বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে, আমি কেন পিছিয়ে থাকবো! আমার বাবা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে জীবন বাজি রেখে এ দেশ স্বাধীন করেছেন। সেই দেশ আজ এগিয়ে গেছে, আমিও বসে থাকবো না। ইন্টারনেট

রাজকীয় সুবিধা থাকার পরেও যে শহরে কোন মানুষ থাকেনা!

নিস্তবদ্ধ চারপাশ।আশে পাশে কেউ নেই।পুরো একটি শহর।চওড়া চওড়া রাস্তা,রাস্তার দু পাশে বিচিত্র ফুলের বাগান,ফুলের গন্ধে চারপাশের পরিবেশটা আরো মনোরম লাগে,চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পাথরের মূর্তি, বাড়িগুলি মার্বেলে মোড়া ।

দেখেই মনে হবেএই যেন এক র্স্বগীয়লীলা। কিন্তু অবাক হওয়ার বিষয় হল এই সাজানো গোছানো শহরে কোনো মানুষ বসবাস করে না । কারণ এটি মৃতের শহর।চীনের বেইহাই শহরে গুয়াঙ্গুজি জুয়াঙ্গ এলাকা। এখানেই গড়ে তোলা হয়েছিল অত্যাধুনিক এক শহর।

স্থানীয়রা শহরটিকে ‘দ্য সিটি অফ ডেড’ নামেও অভিহিত করে থাকনে। অনেকে একে ভূতুড়ে শহরও বলে থাকে।গুয়াংজি ঝুং চীনের এক স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। এই অঞ্চলেরই দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত একটি শহর ‘বেইহাই’, চীনা ভাষায় যার অর্থ ‘উত্তরের সমুদ্র’।

শহরের উত্তর দিকে রয়েছে গাল্ফ অফ টনকিন সমুদ্র বন্দর। চীনের একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক বন্দর হিসেবে ঐতিহাসিকভাবে এর গুরুত্ব অপরিসীম।

চীন সরকারের ধারণা ছিল, শহরটি ২০০৬ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বের দ্রুততম ­­­­­­ক্রমবর্ধমান শহর হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে। আর এই কারণে সমাজের ধনী শ্রেণীর জন্য গড়ে তোলা হয়েছিল বিলাসবহুল বাড়ি। আশা করা হয়েছিল, সরকারের এই রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগের ফলে সরকার আর্থিকভাবে প্রচুর লাভবান হবে।

আর এ লক্ষ্যেই পুরো শহরজুড়ে সাজানো-গোছানো আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন বাড়িগুলোতে রয়েছে নানা রকমের আমোদ-প্রমোদের ব্যবস্থা। অট্টালিকাগুলোর স্ট্রাকচারাল ডিজাইন বেশ আকর্ষণীয়।

শহরের কোনো কোনো বাড়ির মূল্য চীনা মুদ্রায় প্রায় ৩ মিলিয়ন ইয়েন, বাংলাদেশী টাকায় যার মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা। আবার কিছু কিছু বাড়ির মূল্য তারও বেশি।শহরটির একটি বাংলোর দাম প্রায় ৩০ কোটি টাকা।

তাছাড়া কোনো কোনো আবাসনের সাথে জলধারাসহ ছোট ছোট লেকেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যার মূল্য সবচেয়ে বেশি। শহরটি বছর ছয়েক আগে তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো মানুষ সেখানে স্থায়ীভাবে বাস করেননি। আর এভাবেই নৈসর্গিক ভূদৃশ্যসম্পন্ন এক শহর নির্জনতায় রূপ নিয়েছে।

এসব অট্টালিকা, পার্ক থেকে নানা অত্যাধুনিক বিনোদন ব্যবস্থা তৈরিতে বিনিয়োগকারীরা যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছেন তা ফেরত না আসায় বিনিয়োগকারীদের অবস্থা তথৈবচ। আজ পর্যন্ত একটি অট্টালিকাও বিক্রি করা যায়নি। ফলে খালি অবস্থায় পড়ে রয়েছে এই বিশাল বিশাল আবাসনগুলো।

বিনিয়োগকারীরা এসব আবাসনগুলো তৈরি করেই ক্ষান্ত হননি, শহরের অধিবাসীরা শহরেই নিজের থাকার ব্যবস্থাসহ শহরের আশেপাশেই যাতে নানা কাজকর্মের সুযোগ-সুবিধা পায়, তার জন্য শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হয়েছিল নানা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।

রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীরা মনে করেছিলেন এর ফলে ভবিষ্যতে বিনিয়োগ স্থান সহ বিভিন্ন সম্পদের মূল্য ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে এবং এর মাধ্যমে তারা ব্যবসায়িকভাবে বেশ লাভবান হবেন। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্নপূরণ হয়নি।

কিছু অর্থবান ব্যক্তি কয়েকটি বাড়িসহ প্লট কিনলেও পরবর্তীতে এর রক্ষণাবেক্ষণ এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ভার বেশি হওয়ায়, সে স্থান ত্যাগ করেন। ফলে ব্যবসায়ীদের জন্য এক ভয়ার্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ধীরে ধীরে ব্যবসায়ীরা এই শহরের উন্নয়নের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।

গত বেশ কয়েক বছর ধরে শহরটি লোকশূন্য অবস্থায় রয়েছে। আধুনিক এসব অট্টালিকাগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এসব অট্টালিকা আর রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। আর এভাবেই ভূতুড়ে নগরীতে পরিণত হচ্ছে শহরটি।

কিন্ত কেন এই বিলাসবহুল অট্টালিকাগুলো বিক্রি হচ্ছে না ?এই নিয়ে উঠে এসেছে নানান তথ্য। এই আবাসিক এলাকার প্রধান সমস্যাই হলো, প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা থেকে এই আবাসিক শহর অনেক দূরে অবস্থিত। দৈনন্দিন জিনিসপত্র ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে গেলেও মূল বাণিজ্যিক এলাকাগুলোতে অধিবাসীদের যাওয়ার প্রয়োজন হয়।

অত্যধিক দাম, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অপ্রতুলতা, যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যা- এসব কারণেই এখানকার বাংলো বিক্রি হয়নি। ফলে অত্যাধুনিক সমস্ত সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও ছয় বছর ধরে ফাঁকাই পড়ে রয়েছে এই এলাকা।আর দিন দিন এই শহরটি বিশ্ববাসীর কাছে ভূতুড়ে শহর নামে পরিচিত লাভ করছে।

শেয়ার করুন: