হিজড়া আতঙ্কে রাতের ঢাকা

রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, দোকানপাট যেখানে-সেখানে হিজড়াদের টাকা তোলা নতুন কিছু নয়। তবে আগে মানুষ যা দিত, তা নিয়েই খুশি থাকত হিজড়ারা। কিন্তু ইদানীং টাকার জন্য সাধারণ মানুষের সহানুভূতি কাজে লাগিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় মানুষের উপর অত্যাচার করছে তারা। পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে অভিজাত এলাকাগুলোতে হিজড়া আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপক আকারে। ফলে তাদের উৎপাতে অসহায় হয়ে পড়েছে নগরবাসী।

এদের মাঝে আবার অনেক নকল হিজড়াও আছে। যাদের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে ভয় দেখিয়ে অর্থ উপার্জন করা। যার কারণে এসব হিজড়া চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, পতিতাবৃত্তি ও মারামারিসহ নানা প্রকার অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, মতিঝিল থেকে বাসায় যাওয়ার পথে কমলাপুর ওভার ব্রিজে একদল হিজড়া প্রতিদিন টাকা চায়, আর না দিলেই অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে, যা শুনতে অনেকটা দৃষ্টিকটু।

এদিকে রাজধানীর ব্যস্ততম সড়কগুলোতে হিজড়াদের উৎপাত দেখা যায় চোখে পড়ার মতো। তার মধ্যে- ফার্মগেট, ধানমন্ডি, গুলশান ১-২, বনানী, মানিক মিয়া এভিনিউ, বিজয় সরণি, কাকরাইল, কমলাপুর, শ্যামলী ও উত্তরাসহ বিভিন্ন সড়কে চলাচলা করা মানুষ রেহাই পাচ্ছে না তাদের কাছ থেকে। এছাড়া রাতে নামলেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় হিজড়াদের। যার ফলে নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে পথচারীদের।

এ বিষয়ে সাংবাদিক মাসদুউর রহমান বলেন, হিজড়ারা রাজধানীরসহ সারা দেশের মানুষকে যেভাবে হয়রানি করছে তা আসলেই দুঃখজনক। তবে আমি বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, কারণ এই সরকার হিজড়াদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করেছেন। তাদেরকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে সামাজে স্বীকৃতি দিয়েছে।

যেহেতু সরকার তাদেরকে সামাজে স্বীকৃতি দিয়েছে, তাই সরকারের উচিৎ তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। তাহলে আমার ধারণা, তাদের (হিজড়াদের) এই ধরনের অসহনীয় উৎপাত থেকে সাধারণ মানুষ মুক্তি পাবে।

এ ব্যাপারে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, আমরা হিজড়াদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি।

কিন্তু এরা সামাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে, আবার রাস্তায় গিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপর্কমের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে। তবে এরা যাতে রাস্তাঘাটে অপর্কম করতে না পারে তার জন্য আমরা ভ্রাম্যমাণ আদলাত পরিচালনা করছি। কিন্তু তারপরও এরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা হিজড়াদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। তাদেরকে আমরা বয়স্ক ভাতা প্রধান করছি, এছাড়া বর্তমান সরকারও তাদের নিয়ে অনেক কাজ করছেন।

২০০৪ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটি জরিপে হিজড়াদের সংখ্যা ১৫ হাজার বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে হিজড়াদের দাবি, শুধু ঢাকা শহরেই কমপক্ষে ৩০ হাজার হিজড়া আছে। ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার হিজড়াদের একটি পৃথক লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ২৮ জুন ২০১৮, ১১:০০ অপরাহ্ণ ১১:০০ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • অর্থনীতি

আগস্টে কমল মূল্যস্ফীতি

চলতি বছরের গত আগস্ট মাসে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ কমে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:১৫ অপরাহ্ণ
  • জাতীয়

জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্বপ্ন পূরণ করা হবে: ড. ইউনূস

জুলাই বিপ্লবে সকল শহীদে স্বপ্ন পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:০৭ অপরাহ্ণ
  • জাতীয়

নতুন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন

রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিনকে নতুন পররাষ্ট্রসচিব করা হয়েছে। তিনি সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের স্থলাভিষিক্ত…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ অপরাহ্ণ