বিনোদন

যে সাহাবিকে আগুনে পোড়াতে বললেন মহানবী সা.!

সাহাবি হযরত আলকামা রা.। তার দানের প্রসিদ্ধি ও সুখ্যাতি ছিল।মৃত্যুকালে তার স্ত্রী মহানবী সা. এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার স্বামী খুবই অসুস্থ। মনে হয় আর বাঁচবে না।

তার পাশে এসে নূরানী জবানে কালেমার তালকিন পাঠ এবং দোয়া করে দিন। হয়ত তাঁর মৃত্যু যন্ত্রণা সহজ হতে পারে।যে সাহাবিকে আগুনে পোড়াতে বললেন মহানবী সা. !!

মহানবী সা. হযরত আলী, হযরত সালমান ফারসী ও হযরত বেলাল (রা.) কে নির্দেশ দিলেন তোমরা গিয়ে দেখ আলকামার কি অবস্থা। সাহাবিরা গিয়ে হযরত আলকামাকে বললেন, কালেমা পড়ুন!সাহাবি আলকামা রা. কালেমা পড়তে পারছিলেন না।

হযরত আলী রা. বুঝতে পারলেন তার আর বেশি সময় নেই। অবস্থা খারাপ দেখে তিনি হযরত বেলাল (রা.) কে হুজুরের দরবারে সংবাদ দিয়ে পাঠালেন। হযরত বেলাল (রা.) গিয়ে হুজুর সা.কে সব ঘটনা খুলে বললেন।

আমরা কালেমা শরীফের তালকীন করেছি। কিন্তু তিনি পড়তে পারছিলেন না।হুজুর সা. জানতে চাইলেন, তার মা বাবা কি বেঁচে আছেন? হযরত বেলাল রা. বললেন, তাঁর বাবা নেই, মা বেঁচে আছেন।

অবশ্য বয়সের ভারে দুর্বল হয়ে ঘরে অবস্থান করছেন। হুজুর সা. বললেন, তুমি গিয়ে আলকামার মাকে বল আমার কাছে আসা সম্ভব হবে কিনা? যদি না হয় আমি এখনই তার কাছে যাব।যে সাহাবিকে আগুনে পোড়াতে বললেন মহানবী সা. !!সংবাদ পেয়ে আলকামার মা লাঠি হাতে এসে মহানবীর দরবারে এসে পৌঁছলেন এবং সালাম জানালেন।

আল্লাহর হাবিব তার সালামের জবাব নিয়ে বললেন, তোমার ছেলে আলকামা কেমন ছিল। খবরদার! মিথ্যা বলার চেষ্টা করবেন না। মহান আল্লাহ তায়ালা আমার কাছে ওহি দিয়ে তা প্রকাশ করে দেবেন।আলকামার মা বললেন, তার চরিত্র আচরণ খুবই শালীন।

ইবাদত গুজার, রোজাদার, দানশীলতায় তাঁর মত আদর্শ মানুষ খুব কমই আছে।রাসুল সা. বললেন, সবই ঠিক আছে! কিন্তু তোমার সাথে কেমন আচরণ করেছিল? উত্তরে বললেন, হুজুর! আমার সাথে তাঁর আচরণ সন্তোষজনক ছিল না।

আমি তার প্রতি সন্তুষ্ট নই। সে আমার চেয়ে তাঁর স্ত্রীর প্রতি গুরুত্ব বেশি দিত। আমাকে তার স্ত্রীর অনুগামী করে রাখত। এ একটি বিষয় ছাড়া সব বিষয় ঠিক ছিল।যে সাহাবিকে আগুনে পোড়াতে বললেন মহানবী সা. !!

রাসুল সা. ইরশাদ করেন, এ কারণেই তার মুখে কালেমার তালকীন আসছে না। হযরত বেলাল (রা.) কে নির্দেশ দিলেন, হে বেলাল! কাঠ সংগ্রহ করে আগুন জ্বালাও। অতঃপর আলকামাকে আগুনে নিক্ষেপ কর, তাকে জ্বালিয়ে ফেল।

আলকামার মা বললেন, আমি মা হয়ে কিভাবে এ অবস্থা সহ্য করব। হুজুর সা. বললেন, হে আলকামার মা! মহান আল্লাহ তায়ালার আগুন এ আগুনের চেয়েও ভয়াবহ হবে।

তুমি যদি তার প্রতি সন্তুষ্ট না হও এবং তাকে ক্ষমা না কর তাহলে তার ফরজ নফল কোন এবাদতই আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।একথা শুনে আলকামার মা বললেন, হে রাসুল সা. আপনি সাক্ষী থাকুন!

আমার ছেলেকে ক্ষমা করে দিলাম এবং তার প্রতি আমি সন্তুষ্ট। রাসুল সা. হযরত বেলাল রা. কে বললেন, এখন গিয়ে দেখ আলকামার কি অবস্থা!হযরত বেলাল রা. আলকামার ঘরের দরজার কাছে যেতেই শুনতে পেলেন তিনি উচ্চস্বরে পাঠ করছেন, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলাল্লাহ”। সেই দিনেই আলকামা ইন্তেকাল করেন।

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংবাদ শুনেই ছুটে যান এবং গোসল, কাফন ও দাফন শেষে কবরস্থানে দাঁড়িয়ে সাহাবায়ে কেরামের উদ্দেশ্যে বলেন, হে আনসার ও মুহাজির!

যে ব্যক্তি স্ত্রীকে মায়ের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে তার উপর আল্লাহর লা’নত। তার ফরজ ও নফল ইবাদত কিছুই কবুল হয় না। উল্লেখ্য, এ ঘটনাটি একাধিক সহিহ হাদিসের কিতাবে বর্ণিত হয়েছে।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ১৮ জুলাই ২০১৮, ৮:২০ অপরাহ্ণ ৮:২০ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • অর্থনীতি

আগস্টে কমল মূল্যস্ফীতি

চলতি বছরের গত আগস্ট মাসে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ কমে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:১৫ অপরাহ্ণ
  • জাতীয়

জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্বপ্ন পূরণ করা হবে: ড. ইউনূস

জুলাই বিপ্লবে সকল শহীদে স্বপ্ন পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:০৭ অপরাহ্ণ
  • জাতীয়

নতুন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন

রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিনকে নতুন পররাষ্ট্রসচিব করা হয়েছে। তিনি সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের স্থলাভিষিক্ত…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ অপরাহ্ণ