টেক

তেল চুরির টাকায় ‘ব্রাজিল বাড়ি’!

যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (জেওসিএল) বিগত পাঁচ দশক ধরে জ্বালানি তেল বিপণনের মাধ্যমে জাতিকে সেবা প্রদান করে আসছে। বিগত কয়েক বছর ধরেই তেল চুরির অভিযোগ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দেখা যায়। এবার নারায়নগঞ্জের সেই ব্রাজিল বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে তেল চুরির অভিযোগ উঠেছে।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের সার্চ লাইট নামক একটি অনুসন্ধান মূলক অনুষ্ঠানে তেল চুরির টাকা দিয়ে বিলাস বহুল বাড়ি করার ঘটনা ফাঁস করেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, যমুনা অয়েল কোম্পানিতে গেইজার হিসেবে কাজ করতেন জয়নাল আবেদীন টুটুল। তার কাজ হলো তেল মাপা। টুটুলের বাবার নাম মো: রফিক।

তিনিও এই কোম্পানিতে সিকিউরিটি হিসেবে কাজ করতেন। অসুস্থ অবস্থা মারা গেলে তার পারিবারিক বিবেচনায় জয়নাল আবেদীনকে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে এ কম্পানিতে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়। তখন সে ৫৫ টাকা মজুরিতে ক্যান্টিনে প্লেট পরিষ্কার করত। ২০০৫ সালে তার চাকরি স্থায়ী হয়। তার কিছুদিন পরই অপারেটর হন টুটুল। তারপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

মাথায় তেল দিয়ে নয়, নিজেই ডুবে গেলেন তেলের ভিতর। এমনভাবে ডুবে গেলেন যে, নিজের ভাগ্যটাই পরিবর্তন করে ফেললেন। অপারেটর থেকে সাধনা করে গেইজার হয়ে গেলেন। তখন তার বেতন মাত্র ২৫ হাজার ৪শ ৬২ টাকা। গেইজার হওয়ার পর তেল চুরির সাথে জড়িয়ে পড়েন জয়নাল।

আর এই কাজে তার সঙ্গে রয়েছে যমুনা অয়েলের উচ্চপদস্থ তিন কর্মকর্তাসহ ৫ জন। এই ৫ জন মিলে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেন। যারা তেল চুরি ছাড়াও পদায়ন, পদোন্নতি, নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। এমন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় তাকে সুনামগঞ্জের সাজনা বাজারে বদলি করা হয়। পরে কর্মস্থলে দুর্নীতির অভিযোগে তার (জয়নাল) বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দেন যমুনা অয়েল কোম্পানির এক কর্মকর্তা।

এতো অল্প সময়ে বিপুল সম্পত্তির মালিক কিভাবে হলেন জানতে চাইলে টুটুল বলেন, বাবার পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি, ইউসিবি ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা লোন ও আমার বোন জামাইদের সহযোগিতায় আমি বাড়িটি করেছি। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, নারায়নগঞ্জের এই বাড়িটি ছাড়াও টুটুলের আরো সম্পত্তি রয়েছে। তার মধ্যে বাড়ির পাশে ৮ শতাংশ জমি ও ফতুল্লায় ৪ শতাংশ জমি কিনেছেন তিনি। ইউসিবি ব্যাংক থেকে নেওয়া ২০ লাখ টাকাও ফিরত দিয়েছেন একসাথে।

নোয়াখাল বেগমগঞ্জের কুতুবপুর ইউপি সদস্য নুরুল হুদা আলমগীর বলেন, তার বাবা-দাদার সম্পত্তি হিসেবে প্রায় ৬০ শতাংশ হবে। দীর্ঘ সময় এলাকার সাথে তার যোগাযোগ ছিল না। পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো: আকরাম আল হোসেন বলেন, টুটুল রাশিয়ায় ফুটবল খেলা দেখতে গিয়েছে তার পারমিশন নিয়েছে কি না এটা আমরা খতিয়ে দেখব। আর কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তেল চুরি কিংবা অন্য কোন অভিযোগ আমাদের কাছে আসলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে এর কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করি।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ২৮ জুলাই ২০১৮, ৫:৩২ অপরাহ্ণ ৫:৩২ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • অর্থনীতি

আগস্টে কমল মূল্যস্ফীতি

চলতি বছরের গত আগস্ট মাসে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ কমে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:১৫ অপরাহ্ণ
  • জাতীয়

জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্বপ্ন পূরণ করা হবে: ড. ইউনূস

জুলাই বিপ্লবে সকল শহীদে স্বপ্ন পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:০৭ অপরাহ্ণ
  • জাতীয়

নতুন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন

রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিনকে নতুন পররাষ্ট্রসচিব করা হয়েছে। তিনি সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের স্থলাভিষিক্ত…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ অপরাহ্ণ