কী বলছেন রাজপথে আন্দোলনে দুই মেয়েকে নিয়ে আসা এই বাবা?

বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দুই মেয়েকে সাথে নিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করলেন এক অভিভাবক।

মিজানুর রহমান নামের ওই অভিভাবক বললেন, সন্তানদের রাস্তায় গাড়ির নীচে পড়ার চেয়ে এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা আছে। তাই দুই মেয়েকে সাথে নিয়ে এসেছি। তিনিও নিরাপদ সড়ক চান।

মিজানুর রহমানের দুই মেয়ে বেগম রোকেয়া কলেজের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী। তাদের একজনের নাম পূর্ণতা অপর জনের নাম প্রাপ্যতা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাইন্সল্যাব এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে।

এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী মাইকে বলতে থাকেন, ছোট ভাইরা আমাদের মাঝে দাঁড়াও। আমরা তোমাদের চারপাশে দাঁড়াবো। তোমাদের গায়ে গায়ে আঘাত আসার আগে আমাদের গায়ে লাগবে।

ঢাবির শিক্ষার্থীরা মাইকে আরো বলতে থাকেন, আমাদের বিশ্বাস আছে পুলিশের ওপর। তারা আমাদের তাদের সন্তানের মতো আগলে রাখবে। এসময় লাইসেন্সবিহীন একটি গাড়ি ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা।

তখন ঢাবির শিক্ষার্থীরা মাইকে ঘোষণা দেন, তোমরা বাস ভাঙচুর করো না- একটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে এসে আমরা আরেকটা অন্যায় করতে পারি না।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফার্মগেট এলাকায় অবস্থান নেয় সরকারি বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের সাথে যোগ দেয় বিএফ শাহীন কলেজের শিক্ষার্থীরা।

এরপর মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা কারওয়ান বাজার, বাংলামটর, শাহাবাগ হয়ে সাইন্সল্যাব এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। এসময় তাদের সাথে যোগ দিয়েছে, সিটি কলেজ, ঢাকা কলেজ, আইডিয়াল কলেজ, মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজ, শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজ ইত্যাদি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফার্মগেট থেকে শিক্ষার্থীরা সাইন্সল্যাব এলাকায় যাওয়ার সময় সরকারি বিআরটিসি বাসসহ সকল গণপরিবহন ও চালকদের লাইসেন্স আছে কি না তা চেক করেন।

এসময় মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের গাড়িও আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টার দিকে বাংলামোটর এলাকায় নৌ মন্ত্রণালয়ের একটি গাড়ি আটকে গাড়ির লাইসেন্স আছে কি না তা জিজ্ঞাসা করে শিক্ষার্থীরা। লাইসেন্স আছে জানালে তারা গাড়িটি ছেড়ে দেয়।

এর আগে সোনারগাঁওয়ের সামনে একটি মন্ত্রীর গাড়ি আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় নিরাপত্তাকর্মীরা বের হয়ে মন্ত্রীর গাড়ি বললে ছেড়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।

সেখান থেকে শাহবাগে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এসময় অনেক পুলিশকে হাত জোর করে আন্দোলন থামানোর জন্য অনুরোধ করতে দেখা গেছে। এরপর সেখান থেকে তারা সাইন্সল্যাবে এলাকায় পৌঁছে অবস্থান নেয়। এসময় তারা স্লোগান দিতে থাকে ‘আমার মায়ের কান্না আর না আর না’।

শেয়ার করুন: