সোশ্যাল মিডিয়া

পুরো এলাকায় ধ্বংসলীলা, সাহায্যের জন্য অপেক্ষা

ইন্দোনেশিয়ার ওয়েস্ট নুসা তেগারা প্রদেশের লমবক দ্বীপে গত রোববারের ভূমিকম্প ‘নজিরবিহীন ধ্বংসলীলা’ ডেকে এনেছে। ক্ষতিগ্রস্ত সেই গ্রামগুলো এখন স্রেফ ভুতুড়ে গ্রাম।

রাষ্ট্র পরিচালিত বার্তা সংস্থা অন্তরার বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, ভূমিকম্পে নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৩৪৭ জনে পৌঁছেছে। এএফপির খবরে অবশ্য এই সংখ্যা ১৬৪ জন বলে জানা গেছে।

সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করছে ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষ।

গত রোববার সন্ধ্যায় ইন্দোনেশিয়ার পর্যটনদ্বীপ লমবকে আঘাত হানে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দপ্তর বলেছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল উত্তর লমবকের ১০ কিলোমিটার গভীরে।

ভূমিকম্পের পর আরও কয়েকটি পরাঘাত হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার ভূকম্পন জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, প্রথম ভূমিকম্পটির পর ১২০টির বেশি পরাঘাত অনুভূত হয়েছে।

লমবকের প্রধান পর্যটন এলাকাগুলো দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। ভূমিকম্পে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় প্রাণহানির ঘটনা বেশি ঘটেছে।

ধ্বংসাবশেষে আটকে পড়া হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধারে গত সোমবার তৎপরতা শুরু করেছেন উদ্ধারকারীরা। আটকে পড়া শত শত পর্যটককে উদ্ধার করা হয়েছে।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র সুতপো পুরো নুগরোহ বলেছেন, ভারী যন্ত্রপাতি না থাকায় এবং সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উদ্ধার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের চার দিন পর এখনো বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছাতে পারেননি উদ্ধারকারী কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার সুতপো পুরো নুগরোহ টুইট করে বলেন, নর্থ লমবক ও ওয়েস্ট লবমকে এখনো অনেকে উদ্বাস্তুর মতো পড়ে আছেন।

তাঁদের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো যায়নি। তিনি এএফপিকে ১৬৪ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ১ হাজার ৪০০ জন গুরুতর আহত এবং দেড় লাখ মানুল বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তা গ্রুপ ও কেন্দ্রীয় সরকার ত্রাণ সরবরাহ শুরু করেছে। কিন্তু ভাঙা সড়কের কারণে লমবকের উত্তরে পার্বত্য এলাকায় থাকা লোকজনের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে।

লমবকে থাকা রেডক্রসের মূল্যায়নকারী দলের প্রধান ক্রিস্টোফার রাসি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘দ্বীপের উত্তরাঞ্চলের প্রত্যন্ত অনেক এলাকা থেকে এখনো তথ্য পাইনি। আমি গতকাল গ্রামগুলো ঘুরে দেখেছি। গ্রামগুলো একেবারে মিশে গেছে।’

ভূমিকম্পে হাজারো ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ভূমিকম্পের সময় অনেকেই মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন।

এরই মধ্যে লাদিং লাদিং গ্রামে একটি মসজিদের ধ্বংসস্তূপ থেকে তিনজনের লাশ ও একজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। পেমেনাংয়ের একটি মসজিদের ধ্বংসস্তূপ থেকে একজনের লাশ পাওয়া গেছে।

জাতীয় তল্লাশি ও উদ্ধারকারী সংস্থার মুখপাত্র ইউসুফ লতিফ এএফপিকে বলেছেন, ঘটনার সময় ঘরে কতজন ছিল, প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে সেই হিসাব নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

গ্রামের মানুষেরা এখন তাঁবুতে, রাস্তার পাশে ত্রিপল টাঙিয়ে বা শুকিয়ে যাওয়া ধানখেতে আশ্রয় নিয়েছে। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় অস্থায়ী মেডিকেল কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

কিছু আশ্রয়শিবিরের লোকজন বলছেন, তাঁরা খাদ্যসংকটে ভুগছেন। কেউ কেউ মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না।

দ্বীপের উত্তরাঞ্চলে ১০টি মোবাইল ক্লিনিক স্থাপন করেছে ইন্দোনেশিয়ার রেডক্রস। মাঠপর্যায়ের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, বেশির ভাগ লোকজনেরই হাড়গোড় ভেঙে গেছে এবং মাথায় আঘাত লেগেছে। কিন্তু অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতির অভাবে তাদের অস্ত্রোপচার করা যাচ্ছে না।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ১৪ আগস্ট ২০১৮, ৬:৩৬ অপরাহ্ণ ৬:৩৬ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • অর্থনীতি

আগস্টে কমল মূল্যস্ফীতি

চলতি বছরের গত আগস্ট মাসে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ কমে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:১৫ অপরাহ্ণ
  • জাতীয়

জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্বপ্ন পূরণ করা হবে: ড. ইউনূস

জুলাই বিপ্লবে সকল শহীদে স্বপ্ন পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:০৭ অপরাহ্ণ
  • জাতীয়

নতুন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন

রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিনকে নতুন পররাষ্ট্রসচিব করা হয়েছে। তিনি সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের স্থলাভিষিক্ত…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ অপরাহ্ণ