চোটকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য খেলেছেন এই পাঁচ ক্রিকেটার

কুম্বলের লড়াইয়ের কথা মনে আসছে নিশ্চয়ই মনে আছে? কিংবা ভাঙা হাতে গ্রেম স্মিথের ব্যাটিং! শনি সন্ধ্যায় ক্রিকেট মাঠের চোয়াল চাপা সেই সব লড়াকু ক্রিকেটারদের আরো একবার মনে করিয়ে দিলেন বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল৷ এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কান পেসার সুরঙ্গা লাকমলের বলে বাঁ-হাতের কব্জিতে চোট পান তামিম৷ হাড়ে চিড় ধরে বলে জানা যায়৷ এরপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে এক হাতেই লঙ্কান পেসারদের সামলেছেন৷ তামিমের এই লড়াই সত্যিই কুর্ণিশযোগ্য৷

ক্রিকেট মাঠে এমন চোয়াল চাপা লড়াইয়ের উদাহরণ আরো রয়েছে৷ একনজরে দেখে নেয়া যাক যন্ত্রণা-চোটকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ক্রিকেট মাঠে লড়াই করেছেন এমন পাঁচ ক্রিকেটার৷

৫) গ্যারি কার্স্টেন

২০০৩-০৪ ক্রিকেট মৌসুমে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লাহোর টেস্টে রাওয়ালপিণ্ডি এক্সপ্রেস শোয়েব আখতারের বিষাক্ত বাউন্সারের নাকে চিড় ধরেছিল গ্যারি কার্স্টেনের৷ক্রিজে ৫৩ রানে তখন ব্যাটিং করছিলেন কার্স্টেন৷মাঠের রক্তাক্ত অবস্থায় শুয়ে পড়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান৷নাক ফেটে ঝড়ঝড় করে রক্ত পড়তে শুরু করে৷এরপরই মাঠ ছাড়েন গ্যারি৷হাসপাতালে দশটি সেলাই পরে তাঁর৷ পরে দলের

সংকটময় অবস্থা ফের ব্যাট করতে এসেছিলেন ভাঙা নাক নিয়েই৷ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে গুরুত্বপপূর্ণ ৪৬ রান করেছিলেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান৷ম্যাচের পর মজা করে বলেছিলেন, ‘পিচটা দারুণ, আরেকটু হলেই দেশে ফেরার বিমান ধরতে হচ্ছিল!’

৪)কলিন কাউড্রে

পাঁচ দশক আগের ঘটনা৷১৯৬৩ সালে লর্ডস টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেসারদের সামনে নাটকীয় ম্যাচ উপহার দিয়েছিল ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল৷ থ্রিলার ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৩০১ রান তোলে ক্যারিবিয়ানরা৷ জবাবে ইংল্যান্ডের ইনিংস শেষ হয় ২৯৭ রানে৷ দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

গুটিয়ে যায় ২২৯ রান৷ টেস্ট জিততে চতুর্থ দিনে ব্যাটিং করতে নেমে ৩১ রানে তিন উইকেট খুইয়ে তখন ইংল্যান্ড ব্যাটিং কেণঠাসা৷এই সময়ই ওয়েস হলসের বলে হাত ভাঙলেন কলিন কাউড্রে৷এরপর ব্রায়ান ও ব্যারিংটনের ব্যাটে ভর করে টেস্ট জয়ের পথে এগিয়ে চলে ইংল্যান্ড৷

শেষটায় অবশ্য দ্রুত উইকেট খুইয়ে ফেললে তাল কাটে৷থ্রিলার ম্যাচে শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল আট রান৷ শেষ তিন বলে প্রয়োজনীয় রানের সমীকরণ দাঁড়ায় ছয়রান৷ এসময়ই রান আউট হন ইংল্যান্ডের এক ব্যাটসম্যান৷ সেসময়ই প্লাস্টার হাতে ব্যাট করতে এসেছিলেন কলিন কাউড্রে৷ ম্যাচ অবশ্য শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছিল৷

৩) অনিল কুম্বলে

২০০২ সালে অ্যান্টিগায় চোয়ালে গুরুতর চোট পান ভারতীয় স্পিনার অনিল কুম্বলে৷সেবার অ্যান্টিগা টেস্টে ব্যাট করার সময় মারভিন ডিলনের বাউন্সারের ছোবলে চোট পেয়েছিলেন কুম্বলে। সাময়িক শুশ্রূষা নিয়ে কুম্বলে আরো ২০ মিনিট ব্যাট করেন আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত।

পরে দেখা গেল, যতটা ভাবা হয়েছিল আঘাত তার চেয়ে গুরুতর। চোয়াল ভেঙেছিল কুম্বলের৷ পরে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ‘জাম্বো’ বোলিং করতে নামেন। মাথা ও চোয়ালের বেশির ভাগটাই সাদা ব্যান্ডেজে বাঁধা।

মাঠের পাশ থেকে ভারতীয় দলের ফিজিও অ্যান্ড্রু লিপাস নিজেই সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছিলেন। এ অবস্থায় নড়াচড়া না করলেই যেখানে বিপদ সেখানে কুম্বলে ব্যথানাশক ইনজেকশন নিয়ে খেলেছিলেন। তুলে নিয়েছিলেন লারার মহামূল্যবান উইকেট৷

২)ম্যালকল মার্সাল

১৯৮৪ সালে হেডিংলি টেস্টে নাটকীয় কামব্যাক মার্সালের৷ ল্যারি গোমেজ ৯৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। অগত্যা, ভাঙা হাত নিয়েই নেমে পড়েছিলেন ম্যালকম মার্শাল

। এক হাতে ব্যাট করেও মার্শাল একটা চার মেরেছিলেন, আর গোমেজও তার সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় ইনিংসে বল করতে নেমে আবার সাতটি উইকেট তুলে নিয়েছিলেন মার্সাল৷ বার্বাডোজ বোলারে সেই কীর্তি ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে রয়েছে৷

১) বার্ট সাটক্লিফ

নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারের ক্রিকেটমাঠে এক রুপকথার জন্ম দিয়েছিলেন৷ ১৯৫৩ জোহানেসবার্গ টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকান এক পেসারের বাউন্সারে

শেয়ার করুন: