প্রবাস

আমি ভেবেছি, মাশরাফি ভাই ফাজলামো করছেন কিন্তু…

এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে এক হাতে ব্যাটিংয়ের বীরোচিত কীর্তি নিয়ে আলোচনা চলছে এখনও। তবে সেই চোটেই শেষ হয়ে গেছে সফর ।

তামিম ইকবাল বলেন , একজন ক্রিকেটারের ভালো সময় সব সময় থাকে না। আমি খুব ভালো খেলছিলাম এ বছর। অনেক পরিশ্রম, অনেক ত্যাগ, অনেক কষ্ট করে এই জায়গায় আনতে হয় নিজেকে।

এই সময় ইনজুরির জন্য বিরতি নিতে হচ্ছে, আমার সেটি মানতে কষ্ট হচ্ছে। আমার ক্যারিয়ার যদি দেখেন, আগেও এমন হয়েছে, যখন খুব ভালো খেলছি, তখনই ইনজুরিতে পড়ে গেছি। জানি না, কেন আমার সঙ্গেই এমন হয়।

সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি স্কোরে চোখ রাখছিলাম। হাসপাতালে যাওয়ার পর দেখলাম অবস্থা ভালোই। মুশফিক ও মিঠুনের জুটি যখন ছিল।

হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে দেখলাম যে দ্রুত কয়েকটি উইকেট পড়ে গেছে। খারাপ লাগছিল যে হেরে না যাই আবার! যখন ড্রেসিং রুমে ঢুকলাম, মিরাজ তখন আউট হয়ে ফিরছে। তখন থেকেই মাশরাফি ভাইয়ের নাটক শুরু।

কেমন নাটক?

তামিম: আমি ড্রেসিং রুমে ফেরা মাত্র, হাতের অবস্থা কিছু জিজ্ঞেস না করেই তার প্রথম কথা, ‘তামিম, তোকে কিন্তু ব্যাট করতে হবে। মুশফিক টিকে থাকলে তু্ই ব্যাটিংয়ে নামবি।’

আমি ভেবেছি, উনি ফাজলামো করছেন। উনি তো দেখছেন যে আমার হাতে এতবড় ব্যান্ডেজ করা। আমিও মজা করে ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ’ করে গেছি। কিন্তু উনি দেখি একটু পরপরই আমাকে বলছেন যে, তোকে নামতে হবে। তিনি সত্যিই চাইছেন বোঝার পর আমিও ঠিক করলাম যাব।

তখন অনেক ধরনের আলোচনা হচ্ছিল ওখানে। মাশরাফি ভাই, সুজন ভাই (ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ), কোচ, আমরা সবাই কথা বলছিলাম কোন অবস্থায় নামা যাবে। ঠিক হলো যে শেষ ওভার পর্যন্ত গেলে আর মুশফিক স্ট্রাইকে থাকলে আমি নামব।

ফিজিওর পরামর্শ কি ছিল?

তামিম: একদম ‘শুরু থেকেই সে ‘না’ করে আসছিল। হাতের যে অবস্থা, এখানে ঝাঁকি লাগানো যাবে না। কাজেই দৌড়ানো যাবেই না। স্ট্রাইক নিয়ে বল খেলা তো বহুদূর। মাশরাফি ভাই সেটি কানে তোলেননি।

রুবেল যখন ব্যাট করছিল, ততক্ষণে মাশরাফি ভাই কাঁচি দিয়ে গ্লাভস কাটা শুরু করেছেন। কাউকে কিছু বলার সুযোগ দেননি। আমি বলতে চাইছিলাম যেন নতুনটা না কেটে পুরোনো গ্লাভস কাটেন। সেটির অপেক্ষাও করেননি। নতুনটিই কেটেছেন। তার এক কথা, নামতেই হবে।

ততক্ষণে একজন এসে প্যাড পরানো শুরু করল। আরেকজন আরেক প্যাড। কেউ এসে জুতা বেধে দিচ্ছে। লজ্জার কথা কি বলব, মাশরাফি ভাই এসে অ্যাবডমিনাল গার্ড পরিয়ে দিলেন। ক্রিকেট ইতিহাসে মনে হয় প্রথমবার, অধিনায়ক নিজ হাতে দলের কারও গার্ড পরিয়ে দিলেন।

এরপর রুবেল আউট হলো। মুস্তাফিজও আউট হলো। আমার ব্যাটিংয়ে নামলে স্ট্রাইক নিতে হবে। ফিজিও সমানে না করছেন। কিন্তু মাশরাফি ভাইয়ের ক্রমাগত কথার পর আমার মনেও গেঁথে গেছে যে আমি পারব। নেমে গেলাম।

মাঠে ঢোকার মুখে কোচ বললেন, ‘তামিম, যেও না।’ আমি বললাম, ‘পারব।’ কোচ বললেন, ‘শিওর?’, আমি বললাম, ‘অবশ্যই।’ কোচ আবার বললেন, ‘দেন ইটস ইওর কল।’ আমি হাঁটতে হাঁটতে বললাম, ‘অফকোর্স মাই কল।’

আমি তখন আসলে অন্য একটা জগতে চলে গিয়েছিলাম। ঘোরের মধ্যে ছিলাম যেন। গ্যালারিতে যেভাবে চিৎকার করেছে লোকে, সেটিও আমাকে সাহস জুগিয়েছে।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২:৩৮ অপরাহ্ণ ২:৩৮ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • টেক

বিডিঅ্যাপস কানেক্ট: বিডিঅ্যাপস টপ ডেভেলপারস মিটআপ অনুষ্ঠিত

সম্প্রতি রবি আজিয়াটা লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো বিডিঅ্যাপস কানেক্ট: এঙ্গেজ এন্ড ইনোভেট - টপ…

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১:০৮ অপরাহ্ণ
  • অর্থনীতি

আগস্টে কমল মূল্যস্ফীতি

চলতি বছরের গত আগস্ট মাসে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ কমে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:১৫ অপরাহ্ণ
  • জাতীয়

জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্বপ্ন পূরণ করা হবে: ড. ইউনূস

জুলাই বিপ্লবে সকল শহীদে স্বপ্ন পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:০৭ অপরাহ্ণ