মুখোশের আড়ালে ভদ্রবেশী এক ভয়ংকর কিলারের গল্প!

কিশোরী রুমী আক্তারকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে টাঙ্গাইল থেকে সিলেটের বিশ্বনাথে নিয়ে এসে খুনের ১৭মাস পূর্বে এক পতিতাকেও খুন করে ঘাতক শফিক মিয়া। সে উপজেলার রামাপাশা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত ওয়াহাব উল্লার পুত্র।

আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তী মূলক জবানবন্দিতে এই কথা ঘাতক শফিক স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম।

এনিয়ে তিনি রবিবার দুপুরে থানা প্রাঙ্গনে এক প্রেস ব্রিফিংকালে তিনি সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান। শুধু তাই নয় পূর্ব শক্রতার জেরে প্রতিপক্ষ রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত মুসলিম আলীর পুত্র ইমরান আহমদ রিয়াদ’সহ নিরীহ লোকজনকে ফাঁসানোর জন্য একের পর এক খুন করে আসছে শফিক মিয়া।

ওই পতিতা খুনের ঘটনায় এলাকার নিরিহ দুই যুবক ইমরান আহমদ রিয়াদ ও লুৎফুর রহমান প্রায় সাড়ে ৬মাসের মতো জেলও খাটেন। যেখানে পূর্বের তদন্তকারি কর্মকর্তারা ব্যর্থ হয়ে যান, এবার সেই পতিতা খুনের রহস্যও উদঘাটন করেন বর্তমান ওসি।

জানা যায়, ২০১৭সালের ২২এপ্রিল সকালে রামচন্দ্রপুর গ্রামের আইয়ুব আলীর বাড়ির সামনে থেকে এক অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। তখন থানা পুলিশের এসআই রফিক বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-জিআর ৬৫/১৭।

ওই লাশের সাথে থাকা ভ্যানেটি ব্যাগের ভেতরে পলিথিনে মুড়ানো ইমরান আহমদ রিয়াদ ও দুলাল আহমদ নামের দু’জনের ছবি পাওয়া যায়। আর ওই দুটি ছবি শক্রতা মেটাতে লাশের ভ্যানেটি ব্যাগে রাখে ঘাতক শফিক মিয়া।

কিন্তু ওই ছবিগুলোর উপর ভরসা করে রিয়াদ’কে গ্রেফতার করেন তৎকালিন তদন্তকারি কর্মকর্তা ওসি তদন্ত কামাল হোসেন। সেই সাথে লুৎফুর’কেও গ্রেফতার করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন তদন্তের পর আসামি পক্ষের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি সিলেটের পিবিআই’তে প্রেরণ করা হয়। পরে পিবিআই’র তদন্তকারি কর্মকর্তা মুহন রঞ্জন দাস মামলাটি ফাইনাল রিপোর্ট দেন।

ওই পতিতা খুনের প্রায় ১৭মাস পর ঘাতক শফিক মিয়া টাঙ্গাইল কুমুদিনি হাসপাতাল থেকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিশ্বনাথে নিয়ে কিশোরী রুমি আক্তারকে খুন করে। চলতি মাসের ১০ তারিখে একই স্থান থেকে তার হাত বাঁধা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

তখনও একই কায়দায় লাশের ওড়নায় বাঁধা পলিথিনে মুড়ানো ছিলো রুবেল নামের এক যুবকের মোবাইল নাম্বার। এ ঘটনায়ও থানা পুলিশের এসআই সফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলা নং-১৮। রুমিকে ঠান্ডা মাথায় খুন করে সে আবারও টাঙ্গাইলে চলে যায়। সেখানে গিয়ে তার স্ত্রী হিরা আক্তারকে দিয়ে পুলিশের নিকট ফোন করে বলে ইমরান ও রুবেলকে গ্রেফতার করলে এই হত্যার রহস্য পাওয়া যাবে।

আর এই মোবাইলের সূত্র ধরে ঘাতক শফিক মিয়া ও তার স্ত্রীকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে পুলিশ। আদালতে প্রেরণের পর এ দুটি হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেছে ঘাতক শফিক মিয়া। তার সাথে পতিতা হত্যার সময় আরেক যুবক জড়িত ছিলো বলেও তথ্য দিয়েছে। তার নাম তদন্তের স্বার্থে গোপন রাখা হয়েছে।

তিনি জানান, ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল রাতে সিলেট শহর থেকে খুন হওয়া ওই পতিতাকে তিন হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলে নিজ চালিত বাসে করে বিশ্বনাথে নিয়ে আসে শফিক ও তার এক সহযোগী।

সেই দিন রাতে উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের একটি জঙ্গলে ওই পতিতাকে তারা ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর প্রতিশ্রুতিকৃত টাকা শফিকের কাছে চাইলে তারা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।

একপর্যায়ে তাকে (পতিতা) গলায় ওড়না পেছিয়ে হত্যা করে ঘাতক শফিক ও তার সহযোগী। এরপর লাশটি স্থানীয় আইয়ুব আলীর বাড়ির সামনে রেখে তারা পালিয়ে যায়।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ১ অক্টোবর ২০১৮, ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • অর্থনীতি

আগস্টে কমল মূল্যস্ফীতি

চলতি বছরের গত আগস্ট মাসে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ কমে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:১৫ অপরাহ্ণ
  • জাতীয়

জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্বপ্ন পূরণ করা হবে: ড. ইউনূস

জুলাই বিপ্লবে সকল শহীদে স্বপ্ন পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:০৭ অপরাহ্ণ
  • জাতীয়

নতুন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন

রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিনকে নতুন পররাষ্ট্রসচিব করা হয়েছে। তিনি সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের স্থলাভিষিক্ত…

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ অপরাহ্ণ