সিনেমার গল্পকেও হার মানালো কিশোরী মরিয়ম

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা থেকে রহস্যজনকভাবে নিঁখোজ হওয়ার ১৫দিন পর কিশোরী মরিয়ম আক্তারকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরিয়ম উপজেলার আলীপুরা গ্রামের মৃত বাবুল মল্লিকের মেয়ে।

নিঁখোজ হওয়ার ঘটনায় মরিয়মের মা নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে মহিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে নড়েচড়ে বসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

এ ঘটনায় পটুয়াখালী পুলিশের বেশ কয়েকটি দল অভিযান চালিয়ে রাজধানীর মুগদা থানার মদিনাবাগের খালপাড়ার রুনা ফ্যাশন থেকে কর্মরত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। পরে জানা যায় ‘নিঁখোজ নাটক’ সাজিয়ে বিয়ের হাতে থেকে রক্ষা পেতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় মরিয়ম।

পুলিশ সুপার মইনুল হাসান আরও বলেন, ঘটনার রাতে একটি রাজহাঁস জবাই করে বুকের দুই টুকরা মাংস ও রক্ত ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এবং পায়ের নূপুর ও অন্যান্য আলামত ঘরের মেঝেতে রেখেই পালিয়ে যায় মরিয়ম। সবার অজান্তে ১৯ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে এমন পরিকল্পনা করে পালিয়ে যায় সে।

সকালে কুয়াকাটা খানাবাদ কলেজ সংলগ্ন বাড়ি থেকে বেরিয়ে আলীপুর হয়ে বাসযোগে প্রথমে কলাপাড়া পৌঁছায় মরিয়ম। ওইদিন সকাল ৮টায় কলাপাড়া থেকে ঈগল পরিবহনযোগে ঢাকায় গিয়ে নিজেই গার্মেন্টে কাজ খুঁজে নেয়।

উদ্ধার হওয়া মরিয়মকে আদালতে সোপর্দ করার কথা জানিয়ে পুলিশ সুপার মইনুল হাসান বলেন, মরিয়ম এতই ধূর্ত যে কারও সহায়তা ছাড়াই এমন চাঞ্চল্যকর এবং দুঃসাহসিক পরিকল্পনা একাই সম্পন্ন করে সবাইকে বোকা বানিয়েছে। তার উধাও হওয়ার নাটকে সবাই হতভম্ব।

প্রসঙ্গত, মহিপুর হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতের খাবার খেয়ে মায়ের পাশে ঘুমায়। সকালে তার মা নুরজাহান বেগম মেয়েকে না দেখে খুঁজতে বের হতেই ঘরের মেঝেতে বিভিন্ন আলামত দেখতে পান। ঘরে রক্ত, পায়ের নূপুর, দুই টুকরা মাংস ও রক্তমাখা দুটি ছুরি পড়ে থাকতে দেখেন।

পরে পুলিশে খবর দেয়া হয়। সবাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করেন মরিয়মকে হত্যার পর মরদেহ গুম করা হয়েছে। এ ঘটনার পরদিন মরিয়মের মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।

ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী এ ঘটনায় রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশের একাধিক টিম। সর্বশেষ মরিয়মকে উদ্ধারের মধ্য দিয়ে বের হয় এ ঘটনার আসল রহস্য।

শেয়ার করুন: