‘আল্লাকে খুশি’ করতে মেয়ের গলা কাটল বাবা!

রমজানের সময় ‘আল্লাকে খুশি’ করতে গিয়ে নিজে হাতে ৪ বছরের শিশুকন্যার গলা কাটলেন বাবা। অভিযুক্ত নবাব আলি কুরেশিকে (২৬) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশি জেরার মুখে নিজের দোষ স্বীকার করে সে জানিয়েছে, ‘‘পবিত্র রমজ়ান মাসে আল্লাকে সন্তুষ্ট করার জন্যই সে একাজ করেছে। শিশুটির নাম রিজ়ওয়ানা। ঘটনাটি রাজস্থানের যোধপুরের পীপাড়সিটি গ্রামে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এদিন সকালে মেয়েকে নিয়ে বাজারে গিয়েছিল অভিযুক্ত নওয়াজ। সেখানে নিজের মেয়েকে বেশ কয়েকটি খেলনা ও প্রিয় খাবার কিনে দেয়। এদিন রাতে স্ত্রী ও তার দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে বাড়ির ছাদে ঘুমোতে গিয়েছিলেন নবাব।

মাঝ রাতে ছাদ থেকে মেয়ে রিজওয়ানাকে নিয়ে নীচে নেমে আসেন তিনি। তাকে কোলে বসিয়ে কোরান শোনাতে শোনাতে ধারালো ছুরি দিয়ে তার গলার নলি কেটে দেন নবাব। তার পর শিশুটিকে এক তলার ঘরে রেখে নবাব ছাদে উঠে যান ঘুমোতে।

তার বিবি (স্ত্রী) বলেন, “রাত আড়াইটে নাগাদ হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম থেকে উঠে রিজ়ওয়ানাকে দেখতে পাইনি। মেয়েকে খুঁজতে নীচে নামি। সিঁড়ির সামনে নলি কাটা অবস্থায় মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখি। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল চারপাশ।” এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থানে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ঘটনার পর ওই বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ।

পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় নবাব আলিকেও। জেরার সময় তার কথায় অসঙ্গতি খুজে পায় পুলিশ। টানা জেরার মুখে অবশেষে নিজের দোষ স্বীকার করে সে।

পুলিশ জানাচ্ছে, বাড়ির এক তলার ঘর থেকে রিজওয়ানার দেহ উদ্ধারের পর নবাব তার স্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, বেড়ালে তার মেয়ের নলি কেটে দিয়েছে।

নবাবের দাবি, পবিত্র রমজ়ানের সময় নিজের প্রিয় কোনও মানুষকে উৎসর্গ করলে আল্লা তুষ্ট হন। আর তার কাছে সবচেয়ে প্রিয় ছিল মেয়ে রিজ়ওয়ানা। এ জন্যই সে মেয়েকে খুন করে আল্লাকে উৎসর্গ করেছে।

পুলিশ সুপার রাজন দুষন্ত বলেন, ‘‘শুক্রবার সকালে ৪ বছরের ওই শিশুটির দেহ উদ্ধার করা হয় তার বাড়ির এক তলার একটি ঘর থেকে। গ্রেফতার করা হয়েছে শিশুটির বাবা নবাব আলিকে। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে ধর্মীয় কুসংস্কারের জেরে এই ঘটনা ঘটিয়েছে অভিযুক্ত।’’

শেয়ার করুন: