যার জন্য সংসার ভেঙেছিল তাজিনের এবার সেই মমকে একহাত দিলেন অনিমেষ

মরে গেলেই আহা উহু! বেঁচে থাকতে কেউ পুছে না। ঈদ নাটক মানেই সব টাকা দিয়ে একটা মোশারফ করীম, জাহিদ হাসান, অপূর্ব এবং ষ্টার কাস্ট কিনতে হবে। মরে গিয়ে বেঁচে গেলেন তাজিন। একজন শিল্পির অপমৃত্যুর জন্য আমরাই দায়ী। সামনে অকালমৃত্যুর দীর্ঘ সারি।’

মঙ্গলবার ফেসবুকে এমনি একটি স্ট্যাটাস দিয়ে নতুন করে বিতর্কে জড়ালেন নির্মাতা অনিমেষ আইচ। এই পোস্টটি দেওয়ার পর পরই অসংখ্য নেতিবাচক মন্তব্য আসতে থাকে। এমনকি সেখানে অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মমকেও প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে।

মম৩৩৩৩৩২আর তাই সেদিনের পোসস্টির এবার বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে একটু আগে আরো একটি স্ট্যাটাস দিলেন অনিমেষ আইচ। সেখানে লিখা আছে-

‘গত পরশু তাজিন আহমেদের মৃত্যুর খবর শোনার পর একটা ছোট লেখা লিখেছিলাম।( খানিক বিক্ষোভ থেকে) সেই লেখাকে কেন্দ্র করে নানামুখী বাদ প্রতিবাদ হওয়ায় পূনরায় মূল বক্তব্য পরিস্কার করবার জন্য আজ কিছু বলতে চাই।’

‘কথা হচ্ছিলো অভিনয় শিল্পীদের নিয়ে বিগত ১৮/১৯ বছর ধরে আমি বাংলাদেশের অডিও ভিসুয়াল জগতে কাজ করে যাচ্ছি। অনেক ধরনের পরিবর্তন খুব কাছ থেকেই দেখছি।

অভিনয় যদি কারো আজীবনের পেশা হয় সেটা নিশ্চই দোষের কিছু না। কিন্তু সময়ের আবর্তে একজন অভিনেতাকে নায়িকা থেকে নায়িকার খালা হতে হবে একজন নায়ককে হতে হবে নায়কের বাবা; এও প্রকৃতির অমোঘ খেয়াল।’

‘কিন্তু যার রক্তে অভিনয়ের বীজ রোপন করা আছে, সে যে কোনো ভাবেই তার চরিত্র সঠিক ভাবে উপস্থাপন করবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অতি সম্প্রতি নাটক নিয়ন্ত্রকেরা ( অবশ্যই সবাই নয়) শুধুমাত্র কিছু সংখ্যক অভিনেতাদের নাম নির্ভর নাটক কেনার জন্য যাকে তাকে পরিচালক বানিয়ে দিচ্ছেন। তাতে না দরকার থাকে কোন গল্প না দরকার থাকে পার্শ্ব চরিত্র!’

‘আহামরি কোনো বাজেট থাকে তাও নয়। সেই জনপ্রিয় অভিনেতা শুধুমাত্র উপস্থিত থাকলেই হলো, তিনি হাত পা নাড়াচাড়া করলেই কিছু একটা বিপ্লব ঘটে যাবে যেন।

এখানে ভাবার কোন সূযোগ নেই আমি গুণী স্টার অভিনেতাদের বিপক্ষে, তারা নিজ যোগ্যতায় দর্শক মন ছুয়েছেন। দোষ আমাদের, যারা প্রতিযোগিতা করে তাদের পারিশ্রমিক বাড়িয়েছি; নাটকের দাম কমিয়েছি।’

‘ফলে স্টার অভিনেতাদের অভিনয় পারিশ্রমিক দিয়ে আর কোন টাকা অবশিষ্ট না থাকায় নায়কের বাবার চরিত্র ড্রাইভারকে দিয়ে , আর মায়ের চরিত্র পাশের বাড়ীর ভাবীকে দিয়ে করাচ্ছেন অনেকেই। আর যারা দীর্ঘ বছর অভিনয় শিখে এসেছেন, ক্রমশই তারা কোনঠাসা হয়ে পরছেন আর হতাশার জন্ম দিচ্ছেন।’

‘তাজিন আহমেদ এই হতাশার একজন উদাহরন মাত্র। আরো অনেক যোগ্য অভিনয় শিল্পী এবং কলাকুশলী আছেন যারা ঘরের কোনায় চুপচাপ বসে দেখছেন নব্য রচয়িত এই ইতিহাস! কমেন্ট বক্সে অনেকেই প্রশ্ন করেছিলো আপনি এদের জন্য কি করেছেন, কতজনাকে সুযোগ দিয়েছেন?’

‘সে প্রশ্নের উত্তর আমার দীর্ঘদিনের কলিগেরা কম বেশী জানেন। আর আমি একা তো ইন্ডাস্ট্রী না! আমি আবারো বলতে চাই গুণী স্টার কাস্টের পাশাপাশি অন্যান্য কাস্ট গুলোও যে অতীব গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়টা নিয়ে আমাদের কথা চালাচালি করবার দরকার আছে। তাহলে হয়তো সাম্প্রতিক সময়ে ‘কক্সবাজারে শুটিং পারমিশন’ ইস্যুর মতো এই সমস্যাটির ও একটা সুরাহা হবে। সবাইকে ধন্যবাদ। অনিমেষ আইচ।’

শেয়ার করুন: