পানীয়

সকালে খালি পেটে কার্যকর কিছু পানীয়

ঘুম থেকে উঠেই পেট পুরে খাওয়ার পরিকল্পনা অনেকেরই থাকে। অনেকে আবার সকালে কিছু খেতে চান না। অনেকে খালি পেটে কফি, চা, লেবুর শরবত পান করেন। কিন্তু সকালে খালি পেটে কোন ধরনের পানীয় পান করা আসলেই উপকারী? এমন কিছু পানীয় নিয়ে আলোচনা করা হলো।

লেবু-মধু-পানি: সকালে পান করার খুব প্রচলিত ও জনপ্রিয় পানীয় এটি। হার্ট ভালো রাখতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, ত্বক ভালো রাখতে, হজমপ্রক্রিয়া সচল রাখতে, ঠাণ্ডা-কাশির সমস্যা সমাধানসহ নানা ধরনের উপকার পাওয়া যায় এই পানীয় পান করলে। কুসুম গরম পানিতে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পান করলে এসিডিটি, দাঁতের সমস্যা বৃদ্ধি, হৃিপণ্ডের জ্বালাপোড়া, অনিয়ন্ত্রিত সুগারসহ বেশ কিছু সমস্যা হতে পারে।

ইসবগুল-পানি: যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, তাদের কাছে দীর্ঘ সময় ধরে পরিচিত আয়ুর্বেদিক পানীয় এটি, যা ডিটক্সিফিকেশনেও সাহায্য করে। এ ছাড়া হজমপ্রক্রিয়া ভালো রাখতে, অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বা চর্বির পরিমাণ কমাতে ভালো কাজ করে।

পানিতে মিশিয়ে পান করা যায়। অনেকে কিছু সময় পানিতে ভিজিয়ে রেখে ফুলে উঠলে সেটা পান করেন। মনে রাখতে হবে, এই পানীয় মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণে বমি বমি ভাব, মাঝেমধ্যে পেটে ব্যথা, ক্ষুধা কম লাগাসহ কিছু শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।

চিয়া সিড-পানি: বর্তমান সময়ে এটা বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ভালো ফ্যাটের উৎস, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। এ ছাড়া রক্তে চিনির মাত্রা ও প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পানিতে মিশিয়ে পান করতে হয়, দীর্ঘ সময় ভিজিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই। তবে অতিরিক্ত সেবনের ফলে কারো কারো অ্যালার্জি, ডায়াবেটিস হঠাৎ কমে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তিসি-পানি: তিসি হলো আয়ুর্বেদিক পানীয়। এটা কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, পাকস্থলীর প্রদাহ, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ, মাসিকের সমস্যাসহ ত্বকের নানা সমস্যা সমাধানে কার্যকর। পানিতে মিশিয়ে পান করতে হয়।

তবে দীর্ঘদিন তিসি-পানি পান করলে প্রদাহজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে। এটি ইস্ট্রোজেনের মতো কাজ করে বলে হরমোনের স্বাভাবিক কার্যকলাপে পরিবর্তন আনে। গর্ভবতী মায়ের বা যাঁরা সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন তাঁদের এটি গ্রহণ হতে বিরত থাকতে হবে।

জিরা-পানি: জিরা একটি মসলাসামগ্রী। কিন্তু অনেকেই সেই জিরা-পানি ফুটিয়ে সকালে খালি পেটে পান করেন। এটি হজমপ্রক্রিয়া ভালো রাখতে বেশ সাহায্য করে। যেকোনো ধরনের প্রদাহজনিত সমস্যা কমাতে কার্যকর। গর্ভকালে মর্নিং সিকনেস কমাতেও ভালো কাজ করে। তবে দীর্ঘ সময় পান করলে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা তৈরি হতে পারে।

মেথি-পানি: বহুল প্রচলিত এই পানীয় কোলেস্টেরল, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘ সময় থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ক্যান্সার প্রতিরোধে, টেস্টোস্টেরন লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে, ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে, হজমপ্রক্রিয়া ভালো রাখতে, মলাশয় পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে থাকে মেথি-পানি। তবে গর্ভকালে পান করলে ঝুঁকি হতে পারে। একটানা দীর্ঘ সময় পানে অ্যালার্জি সমস্যা, বদহজম, কিডনির জটিলতা তৈরি হতে পারে।

দারচিনি-পানি: সকালে খালি পেটে অনেকে দারচিনি পানিতে ফুটিয়ে বা দারচিনি গুঁড়া কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে পান করেন। এই পানীয় ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে, হার্ট ভালো রাখতে, হজমপ্রক্রিয়া সঠিক রাখতে, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের চমৎকার উৎস এটি। অনেকের অ্যালার্জি হতে পারে, দুগ্ধদানকারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, কিছু ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করতে পারে।

শেয়ার করুন: