জেনে নিন, নামাজের পর নবী করীম সা. -এর প্রতিদিনের দোয়া

উচ্চারণ: হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহুয়া আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়াহুয়া রাব্বুল আরশিল আযীম। সাত বার। [আবু দাউদ ৫০৮১] অর্থ- আল্লাহ তা’আলা আমার জন্য যথেষ্ট। তিনি ব্যতিত কোন ইলাহ নেই। আমি তাঁরই উপর নির্ভরশীল। তিনি মহান আরশের অধিপতি।
সায়্যিদুল ইস্তিগফার

নবী করীম সা. বলিয়াছেন- যে ব্যক্তি দিনের বেলা এই ইস্তিগফার অন্তরে একীনের সহিত পড়িবে এবং ঐ দিনের সন্ধ্যা হইবার পূর্বে মারা যাইবে সে বেহেশতবাসী হইবে। তদ্রƒপ যে ব্যক্তি রাত্রি বেলা তাহা পড়িবে এবং ঐ রাত্রে ভোর হইবার পূর্বে মারা যাইবে সে বেহেশতবাসী হইবে। [বুখারী:২৯৯/৬. হা.২৩৮৬]

হযরত শাদ্দাদ ইবনে আওস রা. বর্ণনা করিয়াছেন, হযরত নবী করীম সা. বলিয়াছেন, সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার তথা সকল প্রকার ইস্তিগফারের মধ্যে সর্ব শ্রেষ্ঠ ইস্তিগফার এই যে, বান্দা অত্যন্ত কাকুতি-মিনতির সহিত কাতর স্বরে আল্লাহর দরবারে এই রূপ বলিবে-

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আন্তা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আন্তা খালাক্তানী ওয়া আনা আব্দুকা ওয়া আনা আলা আহ্দিকা ওয়া ওয়া’দিকা মাস্তাতা’তু আউযুবিকা মিন শাররি মা সানা’তু আবু’উ লাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবু’উ বিযান্বী ফাগফিরলী ফা ইন্নাহু লা য়াগফিরুয্যুনূবা ইল্লা আন্তা।

অর্থ:‘হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রভু-পরওয়ারদেগার, সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা, পালনকর্তা। তুমি ভিন্ন আর কেহ মাবুদ ও মকসুদ নাই। আমাকে তুমি সৃষ্টি করিয়াছ, আমি তোমারই বান্দা। আমি আমার শক্তি-সামর্থের সবটুকু ব্যয় করিয়া তোমার নিকট প্রদত্ত ওয়াদা-অঙ্গীকারের উপর দৃঢ় থাকিব।

আমার কৃতকর্মের কুফল ভোগ হইতে আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করিতেছি। আমি যে অপরাধ করিয়া বসি তাহা আমি নতশিরে স্বীকার করিতেছি। আমি যে, অপরাধ করিয়া বসি তাহাও স্বীকার করিতেছি। হে প্রভু! তুমি আমাকে ক্ষমা কর। অপরাধ ক্ষমাকারী তুমি ভিন্ন আর কেহ নাই।’

কম পরিশ্রমে অধিক ছাওয়াব হাসিল ও গুনাহ মাফের ওজীফা-

হযরত নবী করীম সা. ইরশাদ করেছেন, যদি কোন ব্যক্তি একশতবার “সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহী” পাঠ করে, তার গুনাহ যদি সমুদ্রের ঢেউ সমপরিমাণও হয়, তবুও তার সমুদয় গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। [মিশকাত] এক হাজার ছাওয়াবের ওজীফা

নবী করীম সা. ইরশাদ করেছেন, একশত বার ‘সুবহানাল্লাহ’ পাঠ করলে, পাঠকারীর আমলনামায় একহাজার ছাওয়াব লেখা হয় এবং তার এক হাজার পাপকে আমলনামা থেকে বিলীন করে দেয়া হয়। [মেশকাত শরীফ] একশত হজ্জের ছাওয়াবের ওজীফা

রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ভোর বেলায় একশতবার ‘সুবহানাল্লাহ’ পাঠ করবে এবং সন্ধ্যা বেলায় একশতবার তা পাঠ করবে সে ব্যক্তি একশত হজ্ব পালনের ছাওয়াব লাভ করবে। [তিরমিযী শরীফ]মীযানের পাল্লা ভারী হওয়ার ওজীফা

রাসূলে করীম সা. ইরশাদ করেছেন, দুটি বাক্য মুখে উচ্চারণ খুবই সহজ, কিন্তু সেগুলোর আমল মাপের পাল্লায় খুবই ভারী এবং আল্লাহর নিকট খুবই পছন্দনীয়।

“সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহী সুবহানাল্লাহিল আজীম”। [বুখারী] দশ খতম কুরআনের ছাওয়াব লাভের সুরা

রাসূলে মাকবুল সা. ইরশাদ করেছেন, প্রত্যেকটি বস্তুর একটি অন্তঃকরণ থাকে। কুরআন মাজীদের অন্তকরণ হচ্ছে সূরা ইয়াসীন। কোন ব্যক্তি একবার সূরা ইয়াছীন পাঠ করলে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য দশবার পূর্ণ কুরআন শরীফ পাঠ করার ছাওয়াব লিখেন। [মিশকাত শরীফ]

দশ লাখ নেকী বৃদ্ধি ও জান্নাত লাভের আমল

নবী করীম সা. ইরশাদ করেছেন, কোন ব্যক্তি যদি বাজারে প্রবেশ করে এই দুআ পড়ে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, য়ুহয়ী ওয়ায়ুমীতু বিয়াদিহিল খাইরু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদীর’ তার জন্য আল্লাহ তা’আলা দশ লাখ ছাওয়াব লিখে দেন, তার দশ লাখ গুনাহ মাফ করে দেন। তার দশ লাখ মরতবা উন্নত করেন এবং জান্নাতে তার জন্য একটি ঘর নির্মান করেন। [তিরমিযী শরীফ]

অধিক ফযীলত লাভের সূরা

রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন সূরাহ যুলযিলাত অর্ধ কুরআনের সমতুল্য, আর কুলহুওয়াল্লাহু আহাদ হচ্ছে এক তৃতীয়াংশ কুরআনের সমতুল্য এবং সূরা কাফিরুন হচ্ছে এক চতুর্থাংশ কুরআনের সমপরিমাণ। [তিরমিযী শরীফ]

পঞ্চাশ বছরের ছগীরা গুনাহ মাফের আমল

নবী করীম সা. ইরশাদ করেছেন, যদি কোন ব্যক্তি দৈনিক দুইশতবার সূরা কুলহুয়াল্লাহু আহাদ পাঠ করে আল্লাহ তা’আলা তার আমলনামা থেকে পঞ্চাশ বছরের সগীরা গুনাহ বিলীন করে দেন।

তবে তার দায়িত্বে কারো ঋণ থাকলে, তা ক্ষমা করা হবে না। [তিরমিযী ] জনৈক সাহাবী বললেন, হে আল্লাহর রাসূল সা. আমি সূরা কুলহুওয়াল্লাহু আহাদকে খুব ভালবাসি। তখন নবী কারীম সা,. বললেন তার প্রতি অগাধ ভালবাসাই তোমাকে জান্নাতে দাখিল করবে। [তিরমিযী শরীফ]

শেয়ার করুন: